সিনথেটিক বুদ্ধি – অসম্ভব কে সম্ভব করার বিশ্বব্যাপী দ্রুততম প্রয়াস
হিমাংশু পাল,
কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি , 1990
উৎসর্গ : প্রফেসর আনন্দ মোহন ঘোষ
“May He direct our intelligence towards the Light”
প্রথম অংশ : বুদ্ধি ও বুদ্ধির কৃত্রিমতা
জন্মের পর থেকেই পিকলু একটু অন্য ধরণের। শিশু-বয়সে অনেকদিন পরে কথা বলা শুরু করে। কথাগুলো ছিল খুবই অস্পষ্ট, জড়ানো; কী বলছে পরিষ্কার করে কিছুই বোঝা যেত না। অল্প অল্প হাঁটতে-চলতে থাকলেও মায়ের কোলে সব সময় থাকতে চাইত। খেলাধুলা বিশেষ কিছু করত না। সমবয়সীদের তুলনায় একটু বড় বয়সে স্কুলে ভর্তি হয়। তার নাকি বুদ্ধির জড়তা আছে ; সে কিনা প্রতিবন্ধী, স্কুলের ভাষায় স্পেশাল কিড !
অথচ তার কাকার ছেলে বাবলু , যে তার চেয়ে এক বছরের ছোট , সে কিনা এক বছর স্কিপ করে সরাসরি সেকেন্ড গ্রেডে এডমিশন নিয়েছে। গিফটেড চাইল্ড !
স্পেশাল কিড ও গিফটেড চাইল্ড তকমাগুলো আর আমেরিকা-ইউরোপ প্রভৃতি উন্নত দুনিয়ায় সীমাবদ্ধ নয়। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশেও আজকাল গিফটেড চাইল্ড, স্পেশাল কিডদের দেখা মেলে।
তাছাড়া আজকাল সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রায়শঃই অনেক জিনিয়াস শিশুর ভাইরাল ভিডিও দেখা যায়। তাদের মধ্যে কোন শিশু দু বছর বয়সে পৃথিবীর সমস্ত দেশের নাম ও তাদের রাজধানীর নাম অনায়াসে বলে দিতে পারে। কেউ কেউ মুখে-মুখে বড় বড় গুন-ভাগ করতে পারে, আবার কোন কোন বালক অ্যাডভান্সড ম্যাথমেটিক্স, যেমন ক্যালকুলাস ইত্যাদি বিষয়ে খুব পারদর্শী , কলেজেও পড়াতে পারে। ম্যানেজমেন্টের সাবজেক্টের উপর দশ বছরের কিশোর তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দিতে পারে, নুতন আইডিয়া দিয়ে পুরোনো সমস্যার সমাধান বাতলে দিতে পারে, এন্টারপ্রেনিও হয়ে কয়েকশো লোকের রুটি রোজকারের ব্যবস্থা, কয়েকদিনের মধ্যে মিলিনিওর বিলিনিওর। আরো কত সব অবাক অবাক কান্ড ঘটাতে পারে – এই শিশু ও কিশোর বয়সেই। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এইসব “জিনিয়াস কিড”-দের অস্তিত্ব কিন্তু খুবই বাস্তব এবং হয়তো আমার আপনার পাশের বাড়ির ছেলে।
তমালিকার ক্লাসে বছর পাঁচেকের ওই ছোট্ট মেয়েটা একদণ্ড স্থির থাকতে পারে না। খুবই অমনযোগী, হাইপার একটিভ। তাকে কোন কথা বলা হলে , সেই কথাটাই সে বার বার রিপিট করে , ক্লাসের অন্য ছেলেদের বিরক্ত করে , হয়তো কারো গায়ে থুথু ছিটিয়ে আনন্দ পায়। ক্লাসের অন্য সব বাচ্ছারা যখন খেলা-ধুলো করে আনন্দ পায়, তখন সে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ছটপট করে , খেলাতেও মন লাগাতে পারে না। ক্লাসে টিচার , বা বাড়িতে মা- বাবা যখন চোখে চোখে কথা বলার চেষ্টা করে, তখনও মেয়েটি তাদের কথা মন দিয়ে শুনে বলে মনে হয় না , বার বার অমনোযোগী হয় , বিরক্ত হয়। পড়াশোনায় সবসময় ভুল করে , বই-খাতা-পেন্সিল হারিয়ে ফেলে। স্কুলের সাইকোলজিস্টের ধারণা মেয়েটি ADHD ( Attention Deficit Hyperactivity Disorder ) রোগে আক্রান্ত ।
স্কট জন্ম থেকেই “ডাউন সিন-ড্রোম” রোগী, আর ঈশানের dilexia আমির খানের কল্পিত চরিত্র হলেও এই রোগের শিকার এখন অনেক কোমল শিশু ও কিশোর-কিশোরী ।
এ ধরণের শিশুদের ।Q একটু কম , কিন্তু কোন এক বিষয়ে খুবই ট্যালেন্টেড। এরাও এক ধরণের স্পেশাল এবং গিফটেড চাইল্ড। কোন এক বিষয়ে তাদের বুদ্ধিমত্তা অসাধারণ ; অনন্য। সেটা কবিতা লেখার ক্ষেত্রে হতে পারে কিংবা ক্রিয়েটিভ আর্টও হতে পারে। এমনকি এইধরণের শিশু ও কিশোরেরা অন্য লোকের মানসিক অবস্থাও পড়তে সক্ষম হয়।
সাইমন নামে যে ছেলেটা ফার্স্ট গ্রেড থেকেই খুব স্মার্ট আর তার বুদ্ধিমত্তার কাছে তার ক্লাসের আর কোন ছাত্র তার ধারে কাছে নাই , তার “বাই পোলার রিস্ক” ধরা পড়ে সিনিয়র গ্রেডে , ঠিক কলেজ এডমিশনের সময়। মেরিটোরিয়াস স্টুডেন্টস হিসাবে আই ভি লিগে ভর্তি হলেও তার মা-বাবা তার বুদ্ধিমত্তায় গর্বিত নয় কারণ তার মেধার কারণ জিনগত মিউটেশন , বারোটা জিন বারোটা বাজিয়ে সে এখন বাইপোলার রোগী হিসেবে ধরা পড়েছে। খুবই আশ্চর্যের বিষয় এই রোগ তাকে বুদ্ধিমান করেছে।
স্টেম ( সায়েন্স , টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড ম্যাথমেটিক্স ) নামে এক অধুনা শিক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছে পৃথিবীর সর্বত্রই। শিক্ষা ব্যবস্থায় এটা একটা নুতন ফিলোসফি যার পোশাকি মানে ইন্টার ডিসিপ্লিনারি প্রোগ্রাম। চারটি ডিসিপ্লিনকে এক করে বাস্তব শিক্ষার প্রয়োগ, থিওরি পড়া এসব স্কুলে তুলনামূলক ভাবে কম। এই ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থা এক বিশেষ শ্রেণীর উন্নত বুদ্ধির ছাত্রীদের মেধার উৎকর্ষের জন্য।
এবার আসি স্কুলছুট প্রতিভাবানদের আলোচনায়। ল্যারি এলিসন , স্টিভ জবস , বিল গেটস ও মার্ক ও জুকেরবার্গ এর সমালোচনায়। বুদ্ধির মাপ কাঠিতে কে বড় ? কে ছোট ? আপনি কোন ব্যক্তিকে প্রথম স্থানে বসাবেন ? কে থাকবে আপনার তৈরি করা তালিকায় শেষে ? অতি শিক্ষিত সত্য নাদেল্লা কিংবা সুন্দর পিচাই ? মেধা তালিকায় কাকে কোন পসিশনে রাখা হবে ? বিসনেস ইন্টেলিজেন্স টেস্ট নিলে কে কাকে টেক্কা দেবে ?
অনন্য প্রসঙ্গে : এবার কয়েকটা প্রশ্ন রাখি আইনস্টাইন বেশি বুদ্ধিমান না জগদীশ বসু ? রবীন্দ্রনাথ না উইলিয়াম শেক্সপীয়ার ? আইনস্টাইন না রবীন্দ্রনাথ ? কে বেশি প্রতিভাবান ? হাঁদা না ভোঁদা ?
আমাদের সময়ে বি ই কলেজের (IIEST) সব ছাত্রই ছিল কম বেশি জিনিয়াস। যত ছাত্র তত প্রতিভা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে স্ট্যান্ড করা ছাত্র যেমন দু একটা সাবজেক্টে সাপ্লি ( ফেল ) পেয়ে পাশ করে , তেমনি জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় কোন মতে লিস্টে নাম তুলে স্রেফ গাঁতিয়ে ( মনোযোগ , অধ্যাবসায় ও অভ্যাস সহকারে ) ফ্যাকাল্টি লড়িয়ে দিতো। নিয়মিত রোবটের মতো গাঁতিয়েও কিছু ছাত্র ফেল করতো , অন্যদিকে কলেজের সিংহভাগ ছাত্র সারা বছর মস্তি মস্করা করে পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে অনায়াসে ফার্স্ট ক্লাস পেত। বুদ্ধি ও মেধার এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এখানে কত দেখা যায়।
আমাদের ঘরের ছেলে দেবু খুবই বিনয়ী । ছাত্র হিসাবে খুব বুদ্ধিমান না হলেও , ওর বেশি পড়াশোনা লাগে না। ফোর বাই – ফোর বাই – ফোর বাই ( 4 X 4 X 4 ) রুবিক কিউব ঘোরাতে ঘোরাতে এখন X – Y – Z মডেলের রুবিক কিউব লিখে ফেলেছে পাইথন দিয়ে। গবেষণা পত্র না লিখলেও অন্যের লেখা সহজেই বুঝতে পারে। নিজে নিজেই শিখে ফেলে। ক্রিটিকাল চিন্তা-ভাবনা করে, কমপ্লেক্স প্রব্লেম তৈরি করতে পারে , অন্যের দেওয়া কঠিন থেকে কঠিনতম প্রব্লেম সলভ করে অনায়াসে। ABSTRACTION , LOGIC ও REASONING ওর মজ্জাগত।
আবার ওর চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কেও সে খুবই সচেতন। আত্ম মর্যাদাবোধও খুবই ; আত্ম সচেতন হলেও বড়ই সুরসিক। রবি ঠাকুরের গান নিজে গাইতে না পারলেও অনেকগুলো ভালো লাগা গান ও কবিতা মনে রাখে , মুখস্থ বলতে পারে , গা-মা-পা-ধা-নি , মা-পা-ধা-নি-সা -চল, নেবো লুটি ওই আনন্দঝর্ণা; গান শুনে আনন্দ পায়। হাসি-কান্না-আবেগ-আবেশ-সহধর্ম-সহমর্ম-রঙ্গ-রসিকতার মোড়কে এক “Multi Dimensional “ সহজাত বুদ্ধি ( জেনুইন ইন্টেলিজেন্স ) ও অনুভূতির প্রতিমূর্তি।
অধীত বিদ্যা , জ্ঞান , ইনফরমেশন ও ডাটা প্রয়োগ করে কৃত্রিম বুদ্ধি ( AI / ML ) তৈরি করে বিভিন্ন যন্ত্রকে স্মার্ট করতে পারে আমাদের ঘরের মানুষ , খুব কাছের মানুষ দেবু। মাঝে মাঝে নিজের স্মার্টনেস যাচাই করার জন্য কম্পিউটার সাথে দাবার প্রতিযোগিতা করে , খেলায় হেরে যায়। নিজের তৈরি মেশিন লার্নিং প্রোগ্রাম লিখে ও ট্রেন করা মেশিনের প্রেডিকশন ক্ষমতা দেখে নিজেই বিস্মিত হয়। গর্ব অনুভব করে , কিন্তু মনের অবচেতনে হার মানার একটা দুঃস্বপ্ন দেবুকে তাড়া করে :- তাহলে কি কৃত্রিম বুদ্ধি সম্পন্ন যন্ত্র মানব রক্ত মাংসের মানুষকে ছাড়িয়ে দেবে ? কোন সুযোগের অপেক্ষায় থেকে যন্ত্র মানব মানুষকে কব্জা করে সমগ্র মানব জাতির প্রভু হয়ে উঠবে ? ডিপ-লার্নিং বিপর্যয় কি সমগ্র মানব জাতির বিপর্যয় ডেকে আনবে ? তিলে তিলে বুদ্ধিমান হওয়ার সাথে সাথে যন্ত্র মানব কি মুহূর্তের মধ্যে শত সহস্র ছোট ছোট রোবটের (ন্যানো বোট) জন্ম ( ক্লোন ) দেবে আর দ্রুতগামী ড্রোন, রকেট ও স্পেসশিপ বা আধুনিক দ্রুতগামী যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে মহা বিশ্বে – মহাকাশে ছড়িয়ে দিয়ে নতুন মহাবিশ্বের সৃষ্টি করবে ? সুপার ইন্টেলিজেন্সের কম্পিউটিং সিলিকন চিপস ডিসাইন করে দেবুর মত জেনুইন বুদ্ধির মস্তিষ্কে ইমপ্লান্ট করে সংকর প্রজাতির মানব জাতিকে দিয়েই কি বর্তমান মানবজাতিকে শেষ করে দেবে ? শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের শেষ প্রার্থনা — ওই দুঃস্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্নই থেকে যায় !
“AI KILL SWITCH” তার আগেই যেন ঠিক মতো আবিষ্কার করে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের আয়ত্তে গচ্ছিত রাখা যায় ॥
দ্বিতীয় অংশ : সহজাত বুদ্ধি ও বুদ্ধির ( জেনুইন ) উৎপাদন শীলতা
সিনথেটিক শাড়ি , সিনথেটিক চুড়ি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সিনথেটিক সামগ্রীর ব্যবহার অনেক দিন থেকেই চলে আসছে।প্রকৃতিতে ন্যাচারাল প্রোডাক্টের মধ্যে বিভিন্ন অতিপ্রয়োজনীয় কেমিকাল কম্পাউন্ড এর অপ্রতুলতার জন্য ল্যাবরেটরিতে সিনথেটিক কেমিস্ট্রি প্রসেস চালু হয়েছে। এই পদ্ধতিতে পাইকারি হারে তৈরি কেমিকাল কম্পাউন্ড ফার্মাসি ও ওধুধ তৈরিতে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ল্যাবরেটরিতে তৈরি সিনথেটিক কেমিকাল কম্পাউন্ড ছাড়া বর্তমান যুগে মেডিসিন উৎপাদন কল্পনাই করা যায় না। অধুনা সিনথেটিক বায়োলজি মানুষকে নিত্য নুতন স্বপ্ন দেখাচ্ছে , মানব জীবনকে উৎকর্ষ করছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োগ করে রোগগ্রস্ত বা রোগপ্রবণ মিউটেটেড জিন কেটে বাদ দেওয়া , উন্নত মানের জিন অ্যাড বা জেনেটিক কোড মোডিফাই করে একদিকে যেমন বহু রোগের নিরাময় করা হচ্ছে, তেমনি পাশাপাশি উন্নত প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর সৃষ্টি হচ্ছে।
সিনথেটিক কেমিস্ট্রি , সিনথেটিক বায়োলজির মতো আরো সব সিনথেটিক প্রযুক্তিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
সেই তুলনায় সিনথেটিক বুদ্ধির প্রয়োগ এখনো সেভাবে বহুল প্রচলিত হয়নি। সিনথেটিক নিউরোবায়োলজির হাত ধরে সিনথেটিক বুদ্ধির পথ চলা সবে শুরু।
মানুষের স্বপ্ন কোথাও কখনো থেমে থাকে না। আদি অনাদি কাল থেকে নবীন প্রজন্ম নিত্য নুতন স্বপ্ন দেখতে থাকে, অসম্ভব কে সম্ভব করার , অবাস্তবকে বাস্তবায়িত করার। “সেই ট্রেডিশন সমানে চলছে।” আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ( AI ) বা কৃত্রিম বুদ্ধির গবেষণা আজ আর ল্যাবরেটরিতে আটকে নেই, AI ML শব্দটা আজকাল আম জনতার মুখে মুখে। রিলিজ পাচ্ছে নিত্য নুতন সাইন্স ফিক্শন , AI নিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে কতশত আর্টিকেল বিভিন্ন জার্নালে, লেখা হচ্ছে নুতন নুতন এলগোরিদম , তৈরি হচ্ছে উন্নত সব অত্যাধুনিক ইন্টেলিজেন্ট মডেল। মেশিন লার্নিং কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে , শিল্প ও কল কারখানায়। ধাপে ধাপে উত্তরণ লক্ষণীয় : আর্টিফিশিয়াল ন্যারো ইন্টেলিজেন্স (ANI) → আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (AGI ) → আর্টিফিশিয়াল সুপার ইন্টেলিজেন্স ( ASI )।
মানুষ এবার ভাবতে শুরু করেছে প্রযুক্তি প্রয়োগে কিভাবে উৎপাদন করা যায় জেনুইন হিউমান ইন্টেলিজেন্স ( সিনথেটিক ইন্টেলিজেন্স )। যে প্রযুক্তিবিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে সূক্ষ থেকে সূক্ষতম ( ন্যানো বায়টেক ) যন্ত্র ইমপ্লান্ট করে গিফটেড চাইল্ড -স্পেশাল চাইল্ড , বুদ্ধি বিকার গ্রস্ত রোগীদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিৱিয়ে আনা যাবে। কিভাবে আবির্ভাব সম্ভব হবে হিউমান থেকে সুপার হিউমান গোষ্ঠীর। আরো একটা ইভোল্যুশন কি ঘটতে চলেছে ? শুরু হয়ে গেছে পরবর্তীকালের অভিব্যক্তি ও অভিযোজন প্রক্রিয়া দ্রুততম গতিতে ? ক্রমবিকাশ ও বিবর্তনবাদ যেন প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই ঘটে চলেছে তার নিজস্ব ছন্দে।
ব্রেন – কম্পিউটার ইন্টারফেস কে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রোগের, বিভিন্ন ব্রেন ডিসঅর্ডার ডিটেক্ট করা এবং সেই অনুযায়ী রিপেয়ারিং যন্ত্রাংশ ডিজাইন করা সম্ভপর হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরিতে সম্প্রতি সিলিকন চিপস এর মধ্যে উক্ত নিউরাল সার্কিটের ডিজাইন পুড়ে কৃত্রিম মস্তিস্ক-পার্টস লার্জ স্কেলে উৎপাদন করা হচ্ছে।আর্টিফিশিয়াল বডি পার্টস , যেমন লিভার ইমপ্লান্ট , ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্টের মতো ব্রেইনের মধ্যে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম , সূক্ষ থেকে সূক্ষতম কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা এখন আর সাইন্স ফিকশনের বিষয় নয়।
এইভাবে লাবরেটোতে তৈরি কাস্টোমাইজড ও পার্সোনালাইজড মস্তিষ্কের সুক্ষ ও কৃত্রিম নার্ভাস সিস্টেম জোড়া দিয়ে দিয়ে পিকলু-বাবলুকে যেমন স্বাভাবিক করা যাবে তেমনি বাইপোলার , এপিলেপসি , আলজাইমার এবং পার্কিনসনের মতো রোগীদেরও নিরাময় করা সম্ভব হবে।
এইসব আপাত-নিরীহ গবেষণার অন্তরালে কিন্তু ঘটে চলছে এক বিশাল ও ভয়ঙ্কর ইঁদুর দৌড়। যাদের একমাত্র লক্ষ সুপার ইন্টেলিজেন্স আবিষ্কার করা, এক শ্রেণীর সুপার হিউমান ধাপে বিবর্তিত হওয়া। যাদের উদ্দেশ্য হতে পারে বর্তমান মানব প্রজন্মকে কন্ট্রোল করা, তাদের উপর প্রভুত্ব ফলানো। এই গবেষণা কেবল মাত্র এম আই টি – হার্ভাডের ল্যাবরেটরিতে কিংবা স্ট্যানফোর্ড বা ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া মতো বিশ্ববিখ্যাত একাডেমিক ল্যাবে গন্ডিবদ্ধ নয় , ব্র্যায়ন জনসনের KERNEL কোম্পানিতে কিংবা ইলন মাস্কের নিউরালিংক ( Neuralink. ) নয় , শুধুমাত্র ফ্রান্স , জার্মানি , ইজরায়েল নয় — ইন্ডিয়া , চীন এমনকি পাকিস্তানও এ বিষয়ে পিছিয়ে নেই। নিউটন হাওয়ার্ড বা এড বয়ডনের মতো বিশ্ববিখ্যাত সুপার ব্রেনের বিজ্ঞানীদের মতো নাম না জানা আরো কত শত ব্রেন নিজেদের ল্যাবে বসে নিরলস সাধনা করে চলেছে তার ইয়ত্তা নাই। মানুষের স্পর্ধা সমস্তপ্রকার সীমা ছাড়িয়ে অসীমকে আয়ত্তে আনার প্রয়াস। অবিশ্বাস হলেও ধ্রুব সত্য – মানুষ তৈরি করতে পেরেছে “ARTIFICIAL CONSCIOUSNESS “ এই সিনথেটিক বুদ্ধির প্রযুক্তিতে॥
Ref: syntheticintelligencelab.org
Comments »
No comments yet.
RSS feed for comments on this post. TrackBack URL
Leave a comment