আমার B.E. College
সুমন কুমার চন্দ্র
২৫ বছর পেরিয়ে গেল B.E. College, আজকের IIEST শিবপুর, থেকে পাশ করেছি। ২৫ টা বছর কেটে গেল – এখান থেকেই বোঝা যায় আমি আজ খোকা তো নই-ই, বরং সূর্য পাটে না বসলেও মধ্যগগন থেকে পশ্চিমে ঢলতে বসেছে। তবে বয়স বাড়লে যেমন একটা বোদ্ধা-বোদ্ধা ভাব দেখিয়ে অনেকে বলে বয়সের সাথে জ্ঞান বাড়ে, তা আমিও ভাবলাম জ্ঞান না বাড়ুক, একটু অভিজ্ঞতা তো হয়েছে – সেগুলো খুঁচিয়ে একটু কেত মারা যাক, এই ২৫ বছর পরে B.E.College কে ঘুরে দেখায়। অবশ্যই এটা আমার চোখে B.E.College, স্বভাবতঃই অনেকের অভিজ্ঞতার সাথে মিলবে আবার অনেকের সাথে মিলবে না। এটা অনেকটা ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ এর মতো – কারুর চোখে রবীন্দ্রনাথ একজন ঠাকুর আবার কারুর কাছে এত জ্ঞানী মানুষ, অসাধারণ লিখতে পারে বলেই মুড়ি-মুড়কির মত এত-শত কেন লিখল। কোনো বিখ্যাত মানুষ-ই হোক বা প্রতিষ্ঠানই হোক তা নিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা, দৃষ্টিভঙ্গী বা মতামত থাকাটাই স্বাভাবিক । এতে এদের গরিমা কোনো অংশে কমে না বরং এদের গরিমা আছে এবং থাকবে বলেই এদের নিয়ে বিভিন্ন মতামত। তাই আমাদের কলেজ নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা আমার।
আমাদের college-এর ’98 batch-এর বন্ধুদের মধ্যে এই ২৫-বছর পূর্তি নিয়ে উত্তেজনা বেশ টান-টান এখন। Whatsapp group-এ আমাদের জনতা college-এর স্মৃতি নিয়ে কত গান-কবিতা-ছবি দিনে-দিনে পোষ্ট করছে এবং তার quality দেখে শুনে আমি মুগ্ধ। আমার তো মনে হয় এরা অনেকেই engineer না হয়ে গায়ক-কবি-শিল্পী-র profession choose করলেও সফল হত। এদের দেখে “অমলেন্দু রোদ্দুর হতে চেয়েছিল”-র হতাশা জাগে না বরং বেশ আশা জাগায়। পেশার সাথে নিজেদের অন্য passion বা প্রতিভার জায়গাগুলো কত সুন্দর বজায় রেখেছে। এবছর ২৪-এ ডিসেম্বর আমাদের batch-এর অনেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে কলেজে meet করবে । এক দিনের জন্য হলেও, পেশার daily-কার চাপ বা সংসারের বিভিন্ন টানা পোড়েন ভুলে গিয়ে পুরোনো বন্ধুদের সাথে meet করবে, in-person – তাও কত বছর পরে, অনেকে তো দীর্ঘ ২৫ বছর পরে। সত্যিই আবেগে ভরা একটা দারুন দিনের অপেক্ষায়। যে যেমন পেশায়-ই থাক, যেখানেই থাক, যত টাকা-পয়সাই করুক, যত সম্মান-ই পেয়ে থাকুক এই দিনটায় যখন এক অপরের সাথে দেখা হবে, চোখে-মুখে যেন প্রথম কথাটাই হবে ‘বন্ধু কি খবর বল,কতদিন দেখা হয়নি!’ – damn exciting দিন !
এমন একটা দাবি অনেকেই করে যে ছোটোবেলাটাই একমাত্র ভালো ছিল, এই বড় হয়েই শালা যত ঝামেলা একটার পর একটা। কিন্তু আমার মনে হয় ছেলেবেলায় বা মেয়েবেলায় অধিকাংশেই ধাড়ী হতে চায় এই মনে করে যে ধাড়ীবেলায় সে যা খুশী করতে পারবে। এটা অনেকটা নদীর এপার-ওপারের মত। আমার মনে হয় আজকে ২৫ বছরের পুরনো দিনগুলোকে nostalgia-য় ভরপুর মনে হলেও, সেই ৪-৫ বছরের কলেজের দিনগুলো শুধুই সোনালী ছিল না, সোনা-রূপো-রাংতায় মোড়া ছিল দিনগুলো। অনেকটা হাঠে-বাজারের ভেতরে থাকলে কেচড়-মেচড় আওয়াজ কিন্তু সেখান থেকে দূরে গেলে যেমন সেই আওয়াজ-ই musical মনে হতে পারে। এবার আমার musical journey-তে ঢোকা যাক।
সালটা ১৯৯৪, Elecrical Engineering-এ চান্স পেলাম Bengal Engineering College-এ। আমাদের বাড়ী কলকাতায়, কলেজ থেকে দূরেও নয়, 2nd Hooghly bridge ক্রশ করলেই প্রায় বাড়ী। তবুও সবাইকে hostel-এ থাকতে হত তখন, তা excitation,ভয় মিলিয়ে মিশিয়ে এক রকম পাঁচমিশালি feeling ছিল তখন। ভয়ের কারণ ছিল ragging। B.E College-এর ragging নিয়ে যা সব শুনেছিলাম তা-তে ছোটোখোকার টাকে ওঠার পালা। শুধু 1st year-এই নয়, ragging-এর আমি ঘোরতর বিপক্ষে – আগেও, আজও। Ragging-এ কাউকে smart করা যায় না – এটা একটা মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। না আমার দাদা-দিদিরা ragging-এ smart হয়েছে, না আমার ভাই-বোনেরা হবে। Ragging করলে করা উচিত তাদের যারা তোকে ragging করেছে, pass on করে 1st year-এর ragging করায় কোনো বীরত্ব বা বীর্যত্ব নেই, ছিল না, থাকবে না। আজকের দিনে Jadavpur University-র স্বপ্নদীপ এর চরম শিকার হয়েছে – জানি না ওর ভয়ঙ্কর মৃত্যুও আগামীদিনের ragging কিছু অংশেও কমাতে পারবে কিনা। আমাদের medical test-এর দিনে কলেজে প্রথম গেলাম, তখন বকুলতলায়, as usual, senior-দের একটা গ্রুপ আড্ডা দিচ্ছিল – আমায় ডেকে একজন জিজ্ঞাসা করল “এই সোনাগাছি কোথায় বলতো? গেছিলিস?” Ragging-এর জগতে এমন প্রশ্ন কোনো লেভেলেই পরে না, জানতাম। তবে এমন প্রশ্নের সোজা উত্তরই ঠিক উত্তর নয় কারণ প্রশ্নের উদ্দেশ্য ঠিক উত্তর পাওয়া নয়, ঠাপানো। যাই হোক, আমাকে সেদিন ঠাপাতে পারেনি কারণ আমার দাদার স্কুলের এক ব্ন্ধু তখন B.E.College-এর senior ছিল, সে আমাকে রক্ষা করেছিল। হায়রে! যদি স্বপ্নদীপের এমন একটা রক্ষাকর্তা থাকত। তবে যে senior দাদা আমার সোনাগাছির জ্ঞান নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিল, ধরা যাক তার নাম ‘ঢ্যামনা-দা’, সে দেখেনি বা care করেনি, আমার বাবা আমার কাছাকাছিই ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই পরে খবরটা relay হয়ে গিয়েছিল আমার মা-র কাছে। ফলে প্রথমদিন যবে কলেজে, Hostel-15 এ গেলাম সে রাতে আমার মোটামুটি ঘুম হলেও আমার মা-এর, আমাকে কলেজে ছেড়ে এসে নিজের বাড়ীতেই সাড়ারাত ঘুম হল না। তবে আমাদের batch-এর ভাগ্য ভালো ছিল, 1year-এর জন্য separate hostel-এর ব্যবস্থা হয়েছিল। তার জন্য আমরা স্বনামধন্য, রাসভারী Professor Bimal Sen-এর separate hostel arrangement-এর মতো strong decision-এর জন্য চিরকৃতজ্ঞ। আমাদের hostel এর নিচে তালা থাকত যাতে senior-রা না ঢোকে, তবে ঢোকার কি উৎসাহ! যেন ভাইদের না চাটতে পারলে জিভটা খসে পড়ে যাবে। তবু সময় সুযোগ পেলেই ground floor-এ গ্রীলের ওধার থেকে room-wise ডেকে পাঠাতো। মনে হবে চিড়িয়াখানায় পশু দেখছে। বিভিন্ন জনের প্রশ্ন বিভিন্ন। আমাকে একবার সমাস জিজ্ঞাসা করেছিল যেগুলো হষ্টেলের বাথরুমে লেখা ছিল। গালাগালি-খিস্তি B.E.College-এ গিয়ে শিখেছি এমন মহামিথ্যে বলব না। সত্যি কথা বললে গালাগালি দিয়ে এমন কিছু কথা এত সংক্ষেপে with emotion বন্ধুদের মনে-মর্মরে-গ্রন্থিতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া যায় যেটা অন্য কোনো ভাবে বা ভাষায় বোঝানো মুশকিল। তবে কলেজে না গেলে ‘চশমা’,’হাওড়া’,’শ্বাশুড়ী’ এমন আপাত সরল শব্দের এমন ভয়ঙ্কর innovative ব্যসবাক্য সমাস হয় আমি বাপের জন্মে জানতাম না। যাই হোক এমন সমাস বলে যদি ragging থেকে উদ্ধার হওয়া যায় তা মন্দ কি!
Second semester থেকে সকাল ১১.৪০-এর মধ্যে ল্যাব শেষ করে আমার দু-একজন loyal partner-এর সাথে দুপুরের শো দেখতে যেতাম ঝরণাতে। এখানে জনহিতার্থে বলা উচিত আমি ঝরণাতে documentary film দেখতে যেতাম না, বড়দের ছবি দেখতে যেতাম কারণ তখন আজকের মত ছবি internet-এর দৌলতে ঘরে আসত না তাই আমাদেরই কষ্ট করে বাইরে যেতে হত। নিন্দুকুরেরা নিশ্চয় বলবে গোল্লায় গেছিল এই ছেলেগুলো কিন্তু সত্যি বলছি আপনি যদি স্বাভাবিক হন বা real সন্ন্যাসী না হন তা হলে আমার যা ভালো লাগত আপনারও ভালো লাগার কথা, প্রকাশটা একটু আলাদা হতেই পারে। তবে
আপনি যদি মনে করেন আমার মতো কলঙ্কের জন্য B.E.College-এর গায়ে দাগ পড়ছে তাহলে বলি এ কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী আমার-ই থাক, কলেজ-এর কোনো দায় নেই এতে। তবে আমি অবশ্য কলেজকে সাবাসী দিই মনে মনে, কারণ hostel-এ না থেকে বাড়ীতে থাকলে তো আর আমি বলতে পারতাম না – মা ‘শীলা কি জওয়ানি’ দেখতে যাচ্ছি, এসে লাঞ্চ করে ১.১৫-র ক্লাস করতে যাব। এ বললে লাঞ্চে ঝ্যাঁটা-পেটা জুটত। তবে এ বললে অনেকে বিশ্বাস করবে না ঝরণা যওয়ার পেছনে অনেক physical labour বা economic and time optimization ছিল। আমরা এমন plan করে এত জোরে হেঁটে কলেজ থেকে on-time show তে পৌঁছতাম যে তখন ৫৫ নম্বরের লড়-ঝড়ে বাসকে overtake করে, বাসের ভাড়া বাঁচিয়ে শো দেখে হষ্টেল ফিরে লাঞ্চ করে আবার ১.১৫-র ক্লাসে যথারীতি হাজির। পুরো খাপে খাপ। ক্লাস মায়া প্রায় করতামই না, বরং বহু বন্ধুর হুল্লাট proxy-ও দিতাম।
এমন করে একটার পর একটা সেমিষ্টার পেরোতে লাগল – হষ্টেল ১৫ থেকে ৮, সেখান থেকে 3rd আর 4th year-এ Sen Hall। হাসি-ঠাট্টা, বকুলতলা, canteen, বি-গার্ডেন, ভাট, গাঁত (মানে পড়াশুনা), ক্লাস, পরীক্ষা, ID (Improved Diner) আর সাথে ঝর্ণা। সবে মিলে চলে যায় দিন। তবে যেহেতু কলকাতায় বাড়ী, শুক্র বা শনিবার ক্লাস শেষ হলেই বাড়ী পালাতাম almost without any exception। বাড়ীতে নিয়ে যেতাম সপ্তাহের পরণের জামা-কাপড় including জাঙ্গিয়া আর সোমবার গুটি-গুটি ফিরতাম with কাচা জামা-কাপড়,অবশ্যই return trip-এ কাচা জাঙ্গিয়া থাকত। সত্যি বলতে সব সময় যে কলেজে বা হষ্টেলে ফিরতে মন চাইত এমনও নয়। সেই নিরস electrical machine, power electronics বা অন্য কোনো subject-এর ক্লাস। তার মধ্যে অনেক ক্লাসেই professor-দের note থেকে, black বা green board হয়ে আমাদের খাতায় note transfer হত bypassing আমার বা আমাদের মগজ। তাই mostly খাতা পড়েই পরীক্ষা দিতাম আর ভালো-মন্দ নম্বর পেয়ে উতরেও যেতাম। তবে electrical engineering-এর জ্ঞান আমার সত্যি ঘন্টা ছিল বা আছে। এও বলব not only আমার থেকে যারা বেশী নম্বর পেত শুধু তারাই নয়, আমার থেকে যারা সাধারণত কম নম্বর পেত তাদেরও অনেকের electrical-এর জ্ঞান আমার থেকে অনেক বেশী। আমার দৌড় খুব বেশী হলে বাড়ীর tube light খারাপ হলে বদলানো। মাঝে tube light-ও আমার prestige রাখত না, মা বাড়ীর ছোটো ছেলেকে ছোটো না করে বলত থাক বাবা, তুই ছেড়ে দে আমি মিস্ত্রী ডেকে আনব। এমন জাতীয় level-এর লজ্জাও আমাকে বইতে হয়েছে। জ্ঞান বাড়ানোর জন্য পড়িনি, নম্বর পাবার জনা পড়তাম, সত্যি বলতে অনেকটা তার দৌলতেই চাকরী পাওয়া। আমাদের সময় থেকেই যে department-এরই হোক অধিকাংশেই IT company-তে join করতাম আর সেখানে রাম-রহিম-যীশুখ্রীষ্ট সব department-এর student এসে কিছুদিন পর অধিকাংশেই Microsoft Office-এর Word,Excel আর Power Point-এর less than 10% feature জেনে আর more than 90% নিখাদ ভাট মেরে একদম 100% life কাটাচ্ছি।
কলেজ জীবনের ঘটনার কথা বলতে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যাবে। কিছু serious আর mostly হাসির খোরাক – সবে মিলে nostalgic। তবে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে চরম কিছু ঘটেনি আমার। সিগারেট, মদ, গাঁজা, ভাং খেতাম না আর প্রেম করিনি, বলা উচিত প্রেম করার ক্যাপা ছিল না আর ছুক- ছুকও করিনি। তবে আজ যদি বলি drink বা smoke করি না অনেকে বলে figure maintain করছিস নাকি তবে কলেজ জীবনে এটা বলার স্পর্ধা ছিল না কারণ প্রত্তুতরে standard জ্বালাময়ী response আসত “তা নেশা না করে কি plucking করেছ বাবা”। না আমি কিছু plucking তখনও করিনি, আজও না। আমার এই নেশা বা প্রেম কচরানোর উদ্দেশ্য হল এর দৌলতে অনেকে কলেজ জীবনে এক নতুন শীতলতা বা উষ্ণতা পায় যা তা সারা জীবন না হলেও অনেক দিন বহন করে। আমি সেই অর্থে হয়ত নিরস মাল ছিলাম, ভাগ্যে কিছু জোটেনি। তবে নেশাখোরদের মাতলামি বা তাদের নিয়ে মজাদার ঘটনা কম enjoy করিনি।
Gear change করে এবার একটু serious turn নেওয়া যাক। আজ ঘুরে দেখলে বুঝি B.E.College-এর hostel life থেকেই প্রথম জানলাম একসাথে বিভিন্ন ধরনের বন্ধুদের সাথে থাকার অভিজ্ঞতা। সবার পারিবারিক আর্থিক সঙ্গতি যেখানে এক নয়, মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা বা পছন্দ-অপছন্দ বিভিন্ন থাকলেও একসাথে থাকার flexibility-টা develop করেছিল সেই hostel life থেকেই। অন্যদিকে আমাদের electrical department-এর professor রা সাধারণত খুব strict ছিলেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই খুব খারাপ লাগত। তবে আজ সেই সমস্ত professor-দেরই বেশী শ্রদ্ধা করতে মন চায় যেমন Prof SKM, Prof CRM বা এমন আরও অনেককে। কলেজ থেকে ২৫ বছর হয়েছে পাশ করেছি plus আমি কোনো কেউকেটা ছিলাম না তবে আমাদের department-এর সব professor-রা, যারা আমাদের class নিতেন, আজও দেখা হলে আমাদের নামে ডাকেন। এটা যে কি বড় পাওনা সেটা বলে বোঝাতে পারব না । এখানে একটা আক্ষেপ আছে – 1st year-এর এক Math professor-এর সামনে ক্লাসে আমি ঠিক বলেছিলাম মনে নেই, উঠতি বয়সের জন্যই হোক বা দুটো অঙ্ক পারার জন্য ফুটো গর্বের জন্যই হোক (না মেয়েদের চোখে hero হবার ইচ্ছে ছিল না) ‘teacher বিশেষ কিছু জানে না’ এমন কিছু একটা বলেছিলাম। তিনি হয়ত ভুলেও গেছেন তবু তাঁর সাথে কোনোদিন দেখা হলে পায়ে হাত দিয়ে নতমস্তকে ক্ষমা চাইব। আজও যে জীবিকা-কে আমি সব থেকে বেশী সম্মান করি সেটা teaching এবং সেই Math professor সত্যিই ভালো মানুষ ছিলেন। আমি সেই professor-এর জায়গায় থাকলে আমাকেই টেনে একটা চড় কষাতাম।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যৌবনের প্রতীক নয়। পৃথিবীর সমস্ত নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেই বহু বছরের পুরোনো। মানুষের বয়স বাড়লে যেমন জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বাড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও বয়স তার প্রগতির বা উন্নতির সহায়ক হয়। আমাদের B.E.College ভারতের দ্বিতীয় পুরোনো engineering college, প্র।য় ১৭০ বছরের পুরোনো। এক সময়ের ভাতের প্রথম বা একদম প্রথম সারির engineering কলেজ, যার হাজার-হাজার ছাত্র-ছাত্রী সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে এবং এর মধ্যে বহু আছে যারা নক্ষত্র মানের। আমাদের ’98 batch-এর অনেকেও সেই মানের এবং আমি গর্বিত তাদের সাথে পড়তে পারার বা hostel-এ একসাথে থাকতে পারার। এটা ঠিক যে নিজের মা-বাবা-সন্তানের মতো নিজের স্কুল-কলেজও আবেগের জায়গা। কিন্তু আবেগটাকে একটু সরিয়ে রাখলে এটা ঠিক যে আমাদের B.E.College-এর মান আগের থেকে পড়েছে। তার কারণ একাধিক এবং আমি সে সব কারণ জানি সে ভণিতাও করছি না। নোংরা politics, process-এর জটিলতা, faculty-র উদ্যোগের অভাব এমন অনেক কারণ আছে। একজন professor যেমন বলেছিলেন আমাদের সময়ে West Bengal বা ভারতের A-class student-রা আসত আর আজ ভারতের B grade-এর student-রা আসে, এটা তাঁর অভিজ্ঞতা। আমি এখানে বলতে চাই আমরা, alumni, যেমন college-এর গর্বে গর্বিত হই, আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে সেই গর্বকে অক্ষুন্ন রাখা। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং মতামত, আমরা (আমি নিজেকে include করে বলছি) বড্ড বেশী narrw-minded হয়ে গেছি। এটা শুধু আমাদের batch-এর জন্যই নয়, আমাদের senior বা junior-দের কথাও বলছি। কিছু alumni হয়ত নিশ্চয়-ই কলেজের জন্য কিছু constructive কাজ করছে কিন্তু আমাদের অধিকাংশের স্বদিচ্ছার অভাব না থাকলেও নিজের limited focus area-র বাইরে প্রচেষ্টার বা কলেজের জন্য কিছু করার বড্ড অভাব। Excuse-গুলোর expiry date থাকা উচিত, ছোটো scale-এরও কিছু initiative নিলে, ‘give-back’ mindset-এই না হয় constructive কিছু কাজ করলে কলেজের সাথে connection-ও থাকে আর আমাদের দায়িত্বও কিছুটা পালন করা হয়। না হলে সারা পৃথিবীর যেখানেই কলেজের জনতা জমায়েত হোক না কেন সেটা গান-বাজনা আর মদ-মাংসের সাথে হই-হই করেই সাধারণত কেটে যায়।
২৫ বছর কেটে গেল B.E.College থেকে বেরিয়েছি। এর মধ্যে কয়েকজন বন্ধুকে হারিয়েও ফেলেছি – যেমন গুদুম (সৌভিক) মার্ডার হয়েছিল দিল্লিতে, আমাদের 4th year-এর project partner গৌতম আত্মহত্যা করেছিল শুনেছিলাম। অংশু বা বেশ কয়েকজনের বহুদিন কোনো খবর নেই, হয়ত ভালোই আছে। তবে যারা আজ নেই বা যাদের আজ কোনো খবর নেই, একটু পেছনে তাকালেই তাদের-কেও দেখতে পাই, কত মজার সাক্ষী আমরা সবাই। B.E. College আমাদের কাছে শুধু একটা Engineering Institute নয়, জীবনে বেড়ে ওঠার চারটে গুরুত্বপূর্ণ বছরের সাক্ষী – তাই আবেগটা আজ আগে আসে। ২৩-এর ২৪-এ ডিসেম্বর ২৫ বছরের পূর্তিতে সবাই নতুন করে পুরনো দিনগুলোকে ফিরে পাবে, মনে পড়বে গুদুম, গৌতমদেরও। যে কোনো জাগতিক বা মহাজাগতিক যা কিছু দীর্ঘস্থায়ী পরিব্তন তা কিন্তু হয় খুব ধীরে, প্রায় সবার অগোচরে বা প্রায় অজান্তে। আমরা আজ যে যাই হই, যেমনই হই তার গঠনের অনেকটা অংশ আমাদের কলেজের প্রাপ্য। আমি একজন সাধারণ মানুষ, তবে নিজের সম্বন্ধে এটুকু বলতে পারি – দেশে-বিদেশে যে দু-চারটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেয়েছি, আমি বিশ্বাস করি, তার মধ্যে যে প্রতিষ্ঠানটি আমার জীবনে আমার আজকের স্বত্ত্বা বা পরিচিতির জন্য সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমার B.E.College।
Comments »
No comments yet.
RSS feed for comments on this post. TrackBack URL
Leave a comment