যখন আমি ছোট ছিলাম তোমায়তো খুঁজিনি,
তখন হয়তো তেমন করে কিছুইতো আর বুঝিনি।
বাবা-মার, গুরুজনের সব কথাই ছিল শীরধার্য্য,
প্রশ্ন করিনি, জানতে চাইনি তার বিশেষ কোন অর্থ;
তাই মেনেই নিয়েছি, বিশ্বাস করেছি, তুমি আছো,
তুমিতো আছোই, তাই আর তোমায় খুঁজিনি।
তুমি আছো….
মায়ের আঁচল ধরে মন্দিরের কাঁসর-ঘন্টায়,
পুরোহিতের উদাত্ত কণ্ঠে মন্ত্রের উচ্চারনে,
লক্ষ্মীর পাঁচালী আর বৃহস্পতিবারের সমবেত ভক্তিগানে,
নৈবেদ্যের থালায় নাড়ু, বাতাসা আর নকুলদানায়।
তুমি আছো….
পরীক্ষার আগে, প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর,
ফল বেরোবার আগে, বাড়ি ফেরার পর,
ক্রিকেট, ফুটবল ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে,
মাথা ঠুকে ঠুকে সেই অদৃশ্য তোমায় অন্তহীন প্রনামে।
বড় হয়ে হল কিছু জ্ঞান, সেই ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে,
পারলাম না আর তেমন করে কিছুই মেনে নিতে;
মনের হাজার জিজ্ঞাসায়, অহরহ প্রশ্নের যন্ত্রণায়,
তুমি কি আছো, কোথায় আছো, খুঁজে ফিরি সেই সত্যকে।
সত্যিই যদি তুমি থাকো….
পাখির কুজনে আর ফুলের হাসিতে,
ময়ুরের নাচে আর রাখালের বাঁশিতে,
মানুষের শুভবুদ্ধি, প্রেম আর ভালোবাসায়,
অনন্ত বিশ্বের সব সৃষ্টির কনায় কনায়;
তবে সেই রকমই কি তুমি আছো….
দুঃর্ভিক্ষে-অনাহারে ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকারে,
ভূমিকম্পে, শুনামিতে অথবা আমফানের ধ্বংসস্তুপে,
বিধ্বংসী প্লেগ, সোয়াইন ফ্লু বা কভেট১৯এর ভাইরাসে,
আর ষট্ রিপুর তারনায় মানুষের নৃশংসতায়??
পাইনি উত্তর, খুঁজে ফিরি তাই সৃষ্টির বিস্ময়…
বেদ-বেদান্ত-উপনীষদ-গীতারজ্ঞানে,
কোরান, বাইবেল, গুরুগ্ৰন্থ বা ধর্মপদে,
রামকৃষ্ণ,সদগুরু বা রবিশংকরের প্রবচনে,
বিজ্ঞানের নিয়মে, প্রকৃতির নিরন্তর খেলায়।
খুঁজেই চলি তাই দিনান্তের শেষ রস্মিতে,
নিজের অন্তরে বারবার সেই একই জিজ্ঞাসায়,
তুমি কি শুধুই এক ‘বিশ্বাস’,
নিজের নিজেকে উজাড় করে যুক্তিহীন এক সমর্পন,
তুমিই কি আমি, আমিই কি তুমি??
কমল রঞ্জন আচার্য্য
২০শে জুলাই, ২০২০
Comments »
No comments yet.
RSS feed for comments on this post. TrackBack URL
Leave a comment